1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টিকটকে মেতে থাকা তরুণ প্রজন্ম

২৩ জুন ২০২৩

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলির মধ্যে টিকটকের রমরমা যেমন বাড়ছে, তেমন বিতর্কও কম হচ্ছে না৷ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে এই প্ল্যাটফর্মের জনপ্রিয়তার কারণে স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে৷

https://p.dw.com/p/4T05Z
Bildergalerie | TikTok Nachrichten
ছবি: Magali Druscovich/REUTERS

টিকটকের ফিড সত্যি অসাধারণ, বৈচিত্র্যপূর্ণ ও মনোরঞ্জক৷ ‘ফর ইউ' পেজে কোন কোন ভিডিও দেখা যাবে, অ্যালগোরিদম তা বাছাই করে৷ তার মধ্যে ভাইরাল ভিডিওর সঙ্গে অখ্যাত মানুষের ভিডিওও থাকে৷ গোটা বিশ্বের মানুষ সেখানে ভিডিও আপলোড করেন বলে বৈচিত্র্যের শেষ নেই৷ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে স্কট গ্যালোওয়ে সেই সাফল্য ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘প্রতি ঘণ্টায় টিকটক কয়েকশো করে সিগনাল পায়৷ যে ধরনের কনটেন্ট আপনাকে টিকটকে আকৃষ্ট রাখে, মনোযোগ ধরে রাখে, প্ল্যাটফর্ম সেই সব ভিডিও বাছাই করতে থাকে৷ যে ব্যক্তি কয়েক ঘণ্টার বেশি টিকটকে সময় কাটিয়েছে, সে বলতে পারবে যে আপনার টিকটক আমার তুলনায় একেবারে আলাদা৷ সেটাই হলো জাদু৷’’

‘ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট' দিয়ে নজর কাড়তে হলে প্রোডাকশন মোটেই নিখুঁত হবার প্রয়োজন নেই৷ চলতি প্রবণতা অনুযায়ী কম সময়ের কন্টেন্ট তৈরি করলে এবং সঠিক সংগীত ব্যবহার করলেই সাফল্য আসে৷ সৃজনশীল ও মৌলিক আইডিয়ারও কদর করা হয়৷ যে কেউ  রাতারাতি টিকটকে ভাইরাল হতে পারে৷ গ্যালোওয়ে বলেন, ‘‘অ্যালগোরিদমের সিগনাল, নমনীয়তা ও শক্তি আপনার জন্য সেরা স্ট্রিমিং নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করতে পারছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি পরিবার গড়ে ১১ থেকে ১৫ মিনিট ধরে কী দেখা যায়, সেই সিদ্ধান্ত নেয়৷ টিকটকে আপনাকে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হয় না৷ চ্যানেল একটাই, অ্যালগোরিদমের দৌলতে আপনি কোন ধরনের কন্টেট দেখতে পছন্দ করেছেন, প্ল্যাটফর্ম তা পুরোপুরি জানে৷ ইতিহাসে অন্য কোনো পরিষেবা এমন অসাধারণ, সবচেয়ে আনন্দদায়ক, সবচেয়ে ফলপ্রসূ স্ট্রিমিং কনটেন্ট দিতে পারেনি৷’’

যতটা সম্ভব সময় ধরে আমাদের প্ল্যাটফর্মে ধরে রাখাই হলো লক্ষ্য৷ টিকটক সেই সাফল্যকে নিখুঁত পর্যায়ে নিয়ে গেছে৷ ব্যবহারকারীরা গড়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা এই প্ল্যাটফর্মে সময় কাটান, বাকি সব পরিষেবার তুলনায় যা অনেক বেশি৷ যেমন ফেসবুকের ইউজাররা এর অর্ধেক সময় ব্যয় করেন৷ টিকটকের অ্যালগোরিদম এক পরিসংখ্যানগত নীতি অনুসরণ করে৷ ইন্টারনেট সোসাইটি হংকং-এর ওয়ং হো ওয়া বলেন, ‘‘তারা নির্দিষ্ট কিছু মানুষের স্যাম্পেল নিয়ে দেখার চেষ্টা করে, তারা কোনো ভিডিও পছন্দ করছে কিনা৷ উত্তর ইতিবাচক হলে তারা পছন্দের মাত্রা বাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে৷ ফল খারাপ হলে তারা সেই সংখ্যা সীমিত রাখার চেষ্টা করে৷ তাই অ্যালগোরিদমে দেখা যায়, যে কিছু ভিডিও এভাবে ভাইরাল হয়ে ওঠে৷’’

টিকটক হলো ‘যাদু’

অন্যদিকে টিকটক স্ট্রিম বাকি প্ল্যাটফর্মের তুলনায় অনেক বেশি নেশার কারণ হতে পারে৷ প্রত্যেকটি ইন্টারেস্টিং ভিডিও মস্তিষ্কে ডোপামিনের নিঃসরণ ঘটায়৷ সেটা আমাদের মনে আনন্দ জাগিয়ে তোলে এবং বার বার সেই অভিজ্ঞতার ইচ্ছা জাগে৷ পর্যায়ক্রমে এমন শক্তিশালী ভিডিও দেখানো হয়, যা ইউজারদের প্ল্যাটফর্মে আটকে রাখে৷ এমন শক্তিশালী টুলের পেছনে কি শুধু এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অবদান রয়েছে? ওয়ং হো ওয়া মনে করেন, ‘‘কোনো কারচুপি আছে কিনা, সেটা এখনো বলা যায় না৷ কারণ আমাদের অ্যালগোরিদম ও তথ্যের ব্ল্যাক বক্সের আড়ালে রাখা হয়৷''

অন্য কোনো প্ল্যাটফর্ম এতটা অস্বচ্ছ নয়৷ আবার অন্য কোনো প্ল্যাটফর্মের এত তরুণ ব্যবহারকারী নেই৷ সেটাই এর আকর্ষণ বাড়িয়ে দেয়৷ ‘জেনারেশন জেড' বলে পরিচিত এই প্রজন্ম টিকটক কনটেন্ট সৃষ্টি করে এবং দেখে৷ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ স্কট গ্যালোওয়ে বলেন, ‘‘এক জনমত সমীক্ষায় ৩০ বছরের কম বয়সি মানুষদের হয় টিকটক অথবা অন্যদিকে নেটফ্লিক্স, এইচবিও ইত্যাদি স্ট্রিমিং মিডিয়ার গুচ্ছ বেছে নেবার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল৷ সিংহভাগই টিকটক বেছে নিয়েছিলেন৷ অর্থাৎ ৩০ বছরের কম বয়সিরা অন্যান্য মিডিয়ার তুলনায় টিকটকেই বেশি সময় কাটাচ্ছেন৷ একদিকে বাকি সব মিডিয়া, অন্যদিকে টিকটক৷ তরুণদের মধ্যে টিকটকেরই রমরমা বেশি৷’’

সত্যি চমকপ্রদ সাফল্য বটে৷

শাহিন ভেলিং/এসবি