1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাঁচ বছর পর ইউরোপ সফরে শি জিনপিং

৬ মে ২০২৪

পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রথমবার ইউরোপাীয় ইউনিয়ন সফর করছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। যাবেন ফ্রান্স, সার্বিয়া, হাঙ্গেরিতে।

https://p.dw.com/p/4fWyG
প্যারিসে শি জিনপিংকে স্বাগত জানাচ্ছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী।
পাঁচ বছর পর ইইউ সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি: Stephane de Sakutin/AFP/Getty Images

২০১৯ সালে শি জিনপিং যখন ইইউ সফর করেছেন, সেই সময়ের সঙ্গে বর্তমান সময়ের কোনো তুলনাই চলে না। তখন কেউ কোভিড ১৯-এর নাম জানত না। রাশিয়া যে ইউক্রেনকেএইভাবে আক্রমণ করবে, তাও ভাবা যায়নি। ব্রাসেলস তখন বেজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করছিল।

এখন সময় একেবারে বদলে গেছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইইউ। চীনের প্রতি নির্ভরতা কমাতে নতুন আইন আনা হয়েছে।

শি তার সফর শুরু করছেন ফ্রান্স থেকে। তারপর তিনি সার্বিয়া ও হাঙ্গেরি যাবেন। প্যারিসে তিনি ইইউ-র কঠোর নীতির মুখে পড়তে পারেন।  তবে সার্বিয়া ও হাঙ্গেরিতে তিনি উষ্ণ অভ্যর্থনা পাবেন। কারণ, এই দুই দেশ রাশিয়ার প্রতি নরম নীতি নিয়ে চলতে চায়।

ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা চায় ফ্রান্স

সোমবার প্যারিসে শি জিনপিংয়ের সম্মানে একটি নৈশভোজের আয়োজন করেছেন মাক্রোঁ। সেখানে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনও থাকবেন। ফরাসি প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে জানানো হয়েছে, আলোচনা পুরোপুরি রাজনৈতিক হবে। রাশিয়া ও ইউক্রেন প্রসঙ্গ সেখানে গুরুত্ব পাবে। 

২০২২ থেকে ইইউ রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু চীন রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ফ্রান্সে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত অবশ্য দাবি করেছেন, রাশিয়ার প্রতি চীন নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে চলছে।

ফ্রান্সের সরকারি সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়া যাতে এই বিরোধ মেটানোর রাস্তায় আসে তার জন্য চীনকে চাপ দেবে ফ্রান্স।

তবে এই চাপে কতটা কাজ হবে তা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ, গতবছর ফ্রান্সের অনুরোধে শি জিনপিং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হন। কিন্তু তারপর কিছুই বদলায়নি। 

প্যারিসের ক্যাথলিক ইনস্টিটিউটের গবেষক এমানুয়েল লিনকট ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''মাক্রোঁর সঙ্গে শি জিনপিংয়ের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এই মাসের শেষের দিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট চীন সফরে যাচ্ছেন। ফলে বেজিং তাদের অবস্থান থেকে সরবে বলে মনে হয় না।''

তার মতে, ''আন্তর্জাতিক বিষয়ে শি জিনপিংয়ের অবস্থান বিন্দুমাত্র বদলের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।''

ইইউ-চাীন বাণিজ্য সম্পর্ক

শি জিনপিংয়ের সফরের সময় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে। বলা হচ্ছে, এয়ারবাস চীনকে বড় অর্ডার দিতে পারে। তবে ইইউ-র বরাবরের বক্তব্য, তারা চীন থেকে অনেক বেশি জিনিস আমদানি করে, তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ অনেক কম।

গতবছর চীনের ইলেকট্রিক গাড়ি নিয়ে তদন্ত করার পর ইইউ জানিয়ছিল, বেজিং এই গাড়ির জন্য প্রচুর ভর্তুকি দিচ্ছে।

ব্রাসেলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ইসাবেলা ফেং জানিয়েছেন, তিনি মনে করেন, ইইউ-চীন বাণিজ্য খুব ধীরে ধীরে কম হতে থাকবে।

ফ্রান্সের পর সার্বিয়ায়

ফ্রান্সের পর সার্বিয়ায় যাবেন শি। এই সময়টাও খুব তাৎপর্যপূর্ণ। ২৫ বছর আগে বেলগ্রেডে মার্কিন বোমা আঘাত করেছিল চীনা দূতাবাসকে। সেই সময় যুগোস্লাভিয়ায় বিরুদ্ধে ন্যাটোর সংঘাতের অংশ ছিল ওই আক্রমণ।

পরে অ্যামেরিকা ওই ঘটনার জন্য ক্ষমা চায়। নিহত চীনা নাগরিকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণও দেয়। কিন্তু চীনে অনেকে এখনো মনে করেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই তাদের দূতাবাসে বোমা ফেলা হয়েছিল।

বেলগ্রেডের গবেষক স্তেফান ব্লাদিস্লাভিলজেভ বলেছেন, ''চীনের কাছে এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বড় পশ্চিমা শক্তি তাদের ক্ষতি করেছিল। তারা এই ন্যারেটিভ নিয়ে চলতে চাইছে যে, বিশ্ব ব্যবস্থার পুনর্গঠন জরুরি।''

রোসি বিচার্ড/জিএইচ/ডিডাব্লিউ