1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্যবহারকারীর নিরাপত্তায় ইউরোপে টিকটকের বিরুদ্ধে তদন্ত

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

শিশু-কিশোরসহ সব ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এক্স-এর পর এবার টিকটকের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে ইইউ কমিশন৷

https://p.dw.com/p/4cpRV
এক কিশোর টিকটক দেখছে ফোনে
শিশু-কিশোরসহ সব ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টিকটকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ইইউ কমিশন৷ছবি: picture alliance / PHOTOPQR/VOIX DU NORD/MAXPPP

২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সেনেটের শুনানির সময় টিকটকের সিইও শোউ জি চিউ স্বীকার করেছেন নিজের সন্তানদেরই তিনি টিকটক ব্যবহার করতে দেন না৷

লন্ডনে পড়াশোনা করা সিঙ্গাপুরি ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা চিউ-এর ছয় ও আট বছর বয়সি দুই সন্তান সিঙ্গাপুরে থাকে৷ সেখানে টিকটক ব্যবহারে বয়সের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই৷

শোউ জি চিউ নিজের সন্তানদেরই ব্যবহার করতে দেন না, অথচ সারা দুনিয়াকে বলেন, ‘‘ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটক খুব ভালো, সবাই ব্যবহার করুন!'' এই বৈপরীত্য স্বাভাবিক কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের পর ইউরোপেও টিকটক নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে৷ বিশেষ করে শিশু-কিশোরের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা এখন খুব জরুরি মনে করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইইউ-র অভ্যন্তরীণ বাজারের কমিশনার থিয়েরি ব্রেটন জানান, তার কার্যালয় ইতিমধ্যে টিকটকের সেবার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে৷এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে তিনি জানান, টিকটক শিশু-কিশোরদের জন্য যথেষ্ট নিরাপদ কিনা তা খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা৷

নিরাপত্তা যথেষ্ট নয় বলে প্রমাণিত হলে টিকটককে দৈনিক আয়ের শতকরা পাঁচ ভাগ পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে ইইউ কমিশন৷ জরিমানার অঙ্ক কত বিশাল হতে পারে? ডেভেলপার কোম্পানি বাইটড্যান্স টিকটক-এর আয়-ব্যয় বিষয়ক তথ্য গোপন রাখায় তা এখনই বলা যাচ্ছে না৷

ইইউ কমিশন চায়, টিকটক তাদের যাবতীয় তথ্য গবেষকদের জন্য উন্মুক্ত করুক৷এছাড়া জনপ্রিয় ভিডিও প্ল্যাটফর্মটিতে যেসব প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয় সেগুলোর একটা পূর্ণাঙ্গ তালিকাও চায় তারা৷

সম্প্রতি এক খবরে জানা যায়, জার্মানিতে চরম ডানপন্থি দল এএফডি সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে টিকটকেই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়৷ছোট ভিডিও শেয়ার করার প্ল্যাটফর্ম টিকটক অবশ্য সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়৷প্রতিদিন অন্তত ১০০ কোটি মানুষ এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন৷ ইউরোপে টিকটক-ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৪ কোটি ২০ লাখের মতো৷

ইইউ-র অভ্যন্তরীণ বাজারের কমিশনার থিয়েরি ব্রেটন জানান, তাদের মূল উদ্বেগ দুর্বল নিরাপত্তা-ব্যবস্থার কারণে শিশু-কিশোরদের নিরাপত্তা, ভুয়া তথ্য এবং ঘৃণা ছড়ানোর আশঙ্কা নিয়ে৷এ কারণে অবশ্য শুধু টিকটকের বিরুদ্ধেই তদন্তে নামছে না ইইউ৷ গত ডিসেম্বরে এক্স-এর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তদন্ত৷ এছাড়া বেশ কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধেও প্রাথমিক তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে৷

 ‘নিরাপত্তা' দিতে কতটা সক্ষম টিকটক?

ইইউ কমিশনার ব্রেন্টন মনে করেন, টিকটকে শিশু-কিশোরদের নিরাপত্তা-দেয়াল খুবই ঠুনকো৷ ১৬ বছরের কম বয়সিরা শর্তসাপেক্ষে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতে পারে, এমনকি ১৩-র কম বয়সিরাও সীমিত আঙ্গিকে তা ব্যবহার করতে পারে৷বয়স যাচাইয়ের একটা ব্যবস্থা আছে৷ তবে ব্যবহারকারী নিজেই নিজের বয়স যাচাইকরণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে৷ ফলে কয়েক ক্লিকেই ব্যবহারকারী নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলতে পারে৷

তাছাড়া টিকটক যে ১৬-র কম বয়সিদের জন্য দিনে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা ব্যবহারের সীমা বেঁধে দিয়েছে, তা-ও কার্যত অকার্যকর৷মাত্র কয়েক ক্লিকে এই বাধাও যে কেউ অতিক্রম করতে পারে৷

টিকটকে আসক্তি

ইইউ কমিশন মনে করে টিকটক অ্যালগরিদম যেভাবে ব্যবহারকারীদের স্ট্রিমে পছন্দনীয় ভিডিও ছড়িয়ে দিচ্ছে তাতে ব্যবহারকারীদের টিকটক-আসক্তি ক্রমাগত বাড়ছে৷

এমন অভিযোগের জবাবে টিকটকের দাবি- ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ডিজিটাল সার্ভিস অ্যাক্ট (ডিএসএ) অনুযায়ী চাইলে অ্যালগরিদম ‘সুইচ-অফ' করা যায়৷তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই ‘সুইচ' এত দূরে যে বহুবার ক্লিক করে সেখানে পৌঁছাতে হয় এবং শিশু-কিশোররা সাধারণত ধৈর্য ধরে সেই ধাপ পর্যন্ত যায় না৷

টিকটক হলো ‘যাদু’

বার্ন্ড রিগার্ট/ এসিবি